এম এ কবীর, ঝিনাইদহ : গনঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরু বলেছেন, যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশে রাজনীতির যে জমিদারী প্রথা চলে আসছে তা ভেঙ্গে ফেলতে হবে। মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী আর এমপির ছেলে এমপি হবে এটা চলতে দেওয়া হবে না। এজন্য আমরা পরিবর্তনের রাজনীতি নিয়ে মাঠে নেমেছি। আগে আমাদের নিজেদের পরিবর্তন হতে হবে, তারপর দেশের। আগষ্ট বিপ্লবের এই নতুন স্বাধীনতা আমাদের নতুন স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে। আমরা আর কোন দেশের দাসত্ব করতে চাই না। বাংলাদেশ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেল করে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। তিনি বলেন, গত ৫ দশকে যারাই ক্ষমতায় গেছেন তারাই দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা আমেরিকা, লন্ডন, কানাডা, মালেশিয়া ও সিঙ্গাপুরে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছিল। ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার থেকে শুরু করে প্রাইমারী স্কুলের পিয়ন সকলেই দূর্নীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। গনঅধিকার পরিষদ দুর্নীতির মুল উৎপাটন করে সমৃদ্ধশীল দেশ ও জাতি গঠনে মাঠে নেমেছে। নুরুল হক নুরু শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকালে ঝিনাইদহ উজির আলী হাইস্কুল মাঠে এক বিরাট গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। গত আগষ্ট বিপ্লবে গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাতে ঝিনাইদহ গণাধিকার পরিষদ এই গণসমাবেশের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও গনঅধিকার পরিষদের জেলা সভপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন ও অন্যান্যের মধ্যে সিনিয়র যুগ্ম সাধরন সম্পাদক হাসান আর মামুন, শাকিলউজ্জামান, এ্যাড নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, মাজেদুল হক, গোলাম সরোয়ার, জাহিদুর রহমান, তৌফিক শাহরিয়ার খান, রবিউল ইমলাম, খুলনার সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল, রাজশাহীর সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কবির, তোফাজ্জেল হোসেন, বরিশালের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড খালিদ হাসান, মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোক্তারুজ্জাম বেলু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক বরকত আলী বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঝিনাইদহ জেলা গনঅধিকার পরিষদের সাধরন সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন। নুরুল হক নুরু আরো বলেন, থানার ওসি, ইউএনও, এসপি, ডিসি, সকলেই সাধরন ছাত্র জনতার রক্তের উপর পা দিয়ে নুতন করে পদায়ন হয়েছে। কাজেই এই কথাটি খেয়াল রেখে আপনাদের কাজ করতে হবে। শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করলে কাউকে ছাড়া হবে না। তিনি বলেন, শেষ সময়ে এসে সাবেক প্রধান মন্ত্রী ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা মানসিক বিকার গ্রস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সে কারনেই তিনি বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্ট ড. ইউনুসকে জেলে পাঠাতে চাইছিলেন। ক্ষমতায় থাকতে খুনি শেখ হাসিনা বলেতেন তিনি নাকি দেশের মানুষকে খাবার দিতেন, ঘরে ঘরে টেলিভিশন দিয়েছেন, হাতে হাতে মোবাইল ফোন দিয়েছেন। এসব কথা বলে তিনি মানসিক রোগীর মত কর্মকান্ড করেছেন। অথচ পালানোর সময় জুতা পর্যন্ত পায়ে দিতে পারেনি। ক্ষমতার লোভে তিনি মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ঢাবির সাবেক এই ভিপি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমাদের তাড়া নাই। সরকারকে জনগনের পালস বুঝতে হবে। প্রশাসনে এখনো আওয়ামীদের প্রেতাত্না রয়ে গেছে। দেশের জনগন আস্থা বিশ্বাস নিয়ে আপনাদের চেয়ারে বসিয়েছেন। যদি চালাতে না পারেন তাহলে রাজনৈতিকভাবে দলগুলোর সাথে বসে সিধান্ত নিন। দেশে আর কোন ফ্যাসিবাদের উত্থান আমরা দেখতে চাই না। তিনি আরো বলেন, মানুষের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আমরা বার বার হামলার শিকার হয়েছি। এখন মানুষ মুক্ত ও স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারছে। এই পরিবর্তন ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। ঝিনাইদহের কৃতি সন্তান ও গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন বলেন, আগামী নির্বাচনে আমরা ক্ষমতায় গেলে জেলার চিকিৎসা খাতে উন্নয়ন এবং বেকার শিক্ষত যুবকদের চাকরী দেওয়া ব্যাবস্থা করা হবে। প্রতিটা বাড়ি থেকে একজন করে চাকরি পাবেন। দেশে কেউ বেকার থাকবে না। অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে আগামী সংসদ নির্বাচন করলে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁনকে ভোট দেওয়ার জন্য আহবান জানান।
Leave a Reply